বৃহস্পতিবার, ১৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ৪:১৭

শিরোনাম :
কথা দিচ্ছি আপনাদের সেবায় আমি সর্বদা পাশে থাকবো : চেয়ারম্যান প্রার্থী এসএম জাকির হোসেন উপজেলার উন্নয়নে আপনাদের পাশে আমি সর্বদা রয়েছি -ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিন মোটরসাইকেল প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলা, আহত-২ সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়া কে এই জাকির হোসেন প্রচার-প্রচারণায় ভোটারদের মন জয় করছেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম যারা আমার জন্য কাজ করেছে আমি তাদের রেখে কখনো পালিয়ে যাইনি-এসএম জাকির হোসেন রেমিটেন্স আহরণে রূপালী ব্যাংকের ২ দিন ব্যাপী ক্যাম্পেইন সম্পন্ন সদর উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষনা বরিশালের দুই উপজেলায় বৈধতা পেলেন ২৫ প্রার্থী ঝালকাঠিতে বেপরোয়া ট্রাক কেড়ে নিল ১৪ প্রাণ

বরিশালের সিভিল সার্জন ডা.মনোয়ার হোসেনের কাছে অসহায় প্রশাসন

dynamic-sidebar

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. মনোয়ার হোসেনের কাছে বৈশ্বিক মহামারী কভিড-১৯ করোনা সংক্রন্ত সংক্রমনের কোন ধরণের সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে না এমন অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে করোনা সম্পর্কে তথ্য না দেওয়াসহ অসহযোগিতার অভিযোগ করেছেন জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক এবং গণমাধ্যমকর্মীরা।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের পক্ষ থেকে করোনার নমুনা সংগ্রহ করার কথা রয়েছে। এব্যাপারে সিভিল সার্জনের পক্ষ থেকে কোন সহযোগিতা মিলছে না।

সোমবার বরিশাল করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান করোনার কোন ধরনের তথ্য না দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন সিভিল সার্জন ডা. মনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে।

এদিকে করোনা উপসর্গের নমুনা সংগ্রহে সাভিল সার্জন মনোয়ার হোসেন কোন ধরনের উদ্যোগ গ্রহন না করার কারনে শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাপাতালের ওপর অতিরিক্ত চাপ বাড়ছে বলে দাবি করেছে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা।

শনিবার বরিশাল শের-ই-বাংলা মডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থপেডিক সার্জন ও করোনা চিকিৎসা মনিটরিং কমিটির সদস্য ডা. সুদীপ হালদার এবং একাধিক গণমাধ্যমকর্মীও সিভিল সার্জন ডা. মো. মনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ করেছেন।

এব্যাপারে জানতে সিভিল সার্জন ডা. মনোয়ার হোসেনের মুঠোফোনে কল দিলে তিনি ফোন কেটে দেন। পরে একাধিকবার ফোন করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

বরিশালের জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান বলেন, জেলার সমস্ত তথ্য দেওয়ার কথা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে। কিন্তু সিভিল সার্জন ডা. মনোয়ার হোসেন কোন ধরণের সহযোগিতা করছেন না। আক্রান্ত হলে স্যাম্পলটা পর্যন্ত সংগ্রহ করছেন না।

তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করছেন না। তাহলে ওনার কাজটা কি? আবার কখনো তথ্য দিলে তা ভুলে ভরা থাকে। সকালের তথ্য বিকেলে, বিকেলের তথ্য পরদিন সকালে দিচ্ছে। আমি যদি ওই ভুলভাল তথ্য দেই তাহলে তো আমাকে দায়দায়িত্ব নিতে হচ্ছে। সেটা একটা সমস্যা।

প্রতিদিন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, পুলিশ কিংবা রোগীর স্বজনদের কাছে ফোন দিয়ে আমাদের তথ্য নিতে হয়। সেই কারণে শনিবার একদিন তথ্য দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে সাধারণ নাগরিকদের সতর্ক রাখতে এবং গণমাধ্যমের কথা বিবেচনায় নিয়ে সোমবার থেকে আবারো হালনাগাদ তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

জেলা প্রশাসক আরো বলেন, গত শনিবার বিকেলে করোনা উপসর্গ নিয়ে এক রোগী মারা গেছেন। তাঁর নমুনা সংগ্রহ করতে জেলা প্রশাসন এবং পুলিশ প্রশাসনের হিসশিম খেতে হয়েছে। মৃত্যুর ৪ থেকে ৬ ঘন্টা পর একরকম জোরাজুরি করে সিভিল সার্জনের পক্ষ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এব্যাপারে কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়েছিলেন।

বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নূরুল ইসলাম বলেন, শনিবার বিকেলে করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া এক রোগীর স্বজনরা তার নমুনা সংগ্রহ করার জন্য পুলিশের সহযোগিতা চায়।

বিষয়টি জানার পর প্রথম সিটি করপোরেশনের ডাক্তারকে ফোন করা হয়। তাদের টেকনোলজিস্ট অসুস্থ্য থাকার কারণে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন।

এরপর বরিশাল জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক সার্জনকে ফোন দেওয়া হলে তিনি বলে দেন তাদের পক্ষে বাইরে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করা সম্ভব নয়।

এরপর সিভিল সার্জন ডা. মনোয়ার হোসেনকে ফোন দেই। তিনিও বাইরে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করা সম্ভব নয় বলে সাফ জানিয়ে দেন। পরে বিষয়টি মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারকে জানানো হয়।

পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসক বিষয়টি বিভাগের স্বাস্থ্য পরিচালককে বলেন। স্বাস্থ্য পরিচালন ডা. মানোয়ার হোসেনকে নমুনা সংগ্রহ করতে বলেন।

এরপর ডা. মনোয়ার হোসেন ফোন দিয়ে বলেন, আজকের এই রোগীর নমুনা আপনাদের অনুরোধে সংগ্রহ করে দিলাম। ভবিষ্যতে এব্যাপারে যেন তাঁকে অনুরোধ করা না হয়।

ওসি নূরুল ইসলাম বলেন, এতকিছুর পর যখন নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ততক্ষণে ৬ ঘন্টা অতিবাহিত হয়েছে। যদি শহরে একজনের নমুনা সংগ্রহ করতে ৬ঘন্টা লাগে, তাহলে গ্রামগঞ্জের অবস্থা কি হবে।

আমাকে যদি একজন ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করতে ৬ ঘন্টা ব্যয় করতে হয়, তাহলে অন্যদের সেবা দেবো কিভাবে? এব্যাপারে আমি সংবাদ সম্মেলন করার চিন্তা করেছি। বিষয়টি মানুষের মাঝে জানানো দরকার। এর একটা বিহিত হওয়া জরুরী।

এদিকে গত শনিবার বিকেলে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থপেডিক সার্জন ও করোনা রোগীর সেবা সংক্রান্ত মনিটরিং সেলের সদস্য ডা. সুদীপ হালদার অভিযোগ করেন, সিভিল সার্জন অফিস থেকে নমুনা সংগ্রহ করার কথা।

কিন্তু তারা তা বন্ধ করে দিয়েছে। জনবল সংকটের দোহাই দিয়ে জেনারেল হাসপাতাল, সিটি করপোরেশনসহ সবাই নমুনা সংগ্রহ করা বন্ধ করে দিয়েছে।

সব চাপ এখন এসে পড়েছে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওপর। এখানে এসে অনেকে তথ্য গোপন করে ডাক্তার, নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের আক্রান্ত করছে।

যেভাবে ডাক্তার, নার্সরা আক্রান্ত হচ্ছে তাতে আগামী দিনে এই হাসপতালের সেবা থাকবে কি না সেটা নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

আমাদের ফেসবুক পাতা

© All rights reserved © 2018 DailykhoborBarisal24.com

Desing & Developed BY EngineerBD.Net